নিম পাতার কয়েকটি আশ্চর্যজনক উপকারিতা - এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকের এই পোস্টটি লিখা। এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহারে এমন কিছু আছে যেটা হয়তো আপনার কল্পনার বাহিরে। এবং ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো।
আপনি যদি কিছু সময় ব্যয় করে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। কেননা আমরা আপনাদের জন্য নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এক কথাই বলা যাই এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
- এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো দেখুন
- ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো দেখুন
- চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- মুখে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার অনেক ভালো কাজ করে। এলার্জি হল আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া যা বিভিন্ন ধরনের উপাদান, যেমন ধুলা, ফুলের রেণু, কিছু খাবার, ওষুধ ইত্যাদির প্রতি হয়। এলার্জির সমস্যার জন্য অনেক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক ওষুধের ব্যবহার অন্যতম। এই প্রাকৃতিক ওষুধগুলির মধ্যে নিম পাতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। নিম গাছের পাতা দীর্ঘকাল ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
নিম পাতার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-হিস্টামিন গুণাগুণ এলার্জির বিরুদ্ধে কার্যকর। এলার্জির লক্ষণগুলি যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি, ত্বকের প্রদাহ ইত্যাদি কমাতে নিম পাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নিম পাতার ব্যবহারের পদ্ধতি বিভিন্ন রকম হতে পারে। তাজা নিম পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায় যা রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও নিম পাতা বেটে ত্বকের ওপর প্রয়োগ করা যায়, যা চুলকানি ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। নিম পাতার রস ত্বকে প্রয়োগ করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
নিম পাতা দিয়ে তৈরি নিম তেলও এলার্জির জন্য খুব উপকারী। নিম তেল সরাসরি ত্বকের প্রদাহযুক্ত স্থানে লাগানো যায়। এটি ত্বকের সংক্রমণ রোধ করে এবং ত্বককে শীতলতা প্রদান করে। নিমের গুণাগুণে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, একজিমা, ফুসকুড়ি ইত্যাদি কমিয়ে আনে। নিম পাতা দিয়ে বানানো চা পান করাও এলার্জির বিরুদ্ধে উপকারী হতে পারে। প্রতিদিন এক কাপ নিম পাতার চা পান করলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং এলার্জির প্রভাব কমে।
নিম পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ শরীরের ভেতরের ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে দেয়। সব মিলিয়ে, এলার্জির প্রতিকার হিসেবে নিম পাতা খুবই কার্যকর। এটি একটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ উপায় যা এলার্জির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তবে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এলার্জির চিকিৎসায় নিম পাতার ব্যবহার অনেকদিন ধরেই জনপ্রিয়। নিম গাছের পাতা বিভিন্ন প্রকারের প্রদাহ ও চর্মরোগ নিরাময়ে কার্যকরী হিসেবে পরিচিত। এলার্জির ক্ষেত্রে নিম পাতা ব্যবহার করার কিছু উপায় নিচে দেওয়া হলো:
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহারের পদ্ধতি:
নিম পাতা পেস্ট:
- কিছু তাজা নিম পাতা নিন এবং ভালো করে ধুয়ে নিন।
- এই পাতাগুলি একটি পেস্ট আকারে মিশিয়ে নিন।
- এলার্জি আক্রান্ত স্থানে এই পেস্ট প্রয়োগ করুন এবং প্রায় ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
- এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে ২-৩ বার করতে পারেন।
নিম পাতা চা:
- এক মুঠো তাজা বা শুকনা নিম পাতা নিন।
- এক কাপ পানিতে এই পাতাগুলি ফুটিয়ে নিন।
- চা ঠান্ডা হয়ে গেলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
নিম পাতা তেল:
- নিম পাতার তেল বাজারে পাওয়া যায়।
- সরাসরি তেলটি এলার্জি আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করতে পারেন।
- এটি ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
নিম পাতা পানির স্নান:
- এক গামলা গরম পানিতে কিছু নিম পাতা দিন এবং কিছুক্ষণ ধরে রাখুন।
- এই নিম পানিতে স্নান করুন। এটি চুলকানি ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
সতর্কতা:
- যাদের নিম পাতা বা নিম জাতীয় পণ্যতে এলার্জি রয়েছে, তাদের জন্য এই পদ্ধতিগুলি প্রযোজ্য নয়।
- দীর্ঘ সময় ধরে নিম পাতা ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে যে সব নিয়ম জানলেন সে সব নিয়ম মেনে নিম পাতা ব্যবহার করবেন। নিম পাতার প্রাকৃতিক গুণাবলীর কারণে এটি এলার্জির চিকিৎসায় একটি ভালো উপায় হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে কার্যকরী হবে এমন নিশ্চয়তা নেই, তাই সতর্কভাবে ব্যবহার করা উচিত।
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো দেখুন
নিম পাতার উপকারিতা:
- নিম পাতার মধ্যে শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রোপার্টি রয়েছে, যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন অ্যাকনে, একজিমা, এবং ছত্রাক সংক্রমণ দূর করতে সহায়ক।
- নিম পাতায় প্রদাহ বিরোধী গুণাবলী রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত, নিম পাতা প্রয়োগ করলে এলার্জির কারণে হওয়া ত্বকের প্রদাহ কমে যায়।
- নিম পাতা রক্ত পরিশোধনে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি রক্তের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পরিষ্কার রাখে।
- গবেষণায় দেখা গেছে যে নিম পাতা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত নিম পাতা সেবনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
- নিম পাতা ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, ফলে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- নিম পাতার রস পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন কৃমি, গ্যাস, এবং হজম সমস্যা দূর করতে কার্যকরী। এটি অন্ত্রের জন্যও উপকারী।
নিম পাতার অপকারিতা:
- কিছু লোকের ক্ষেত্রে নিম পাতা সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করলে ত্বকের জ্বালা বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- গর্ভবতী নারীদের নিম পাতা বা নিম পণ্য ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি গর্ভপাত ঘটাতে পারে বা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- শিশুদের নিম পাতা বা নিম তেল সরাসরি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকা উচিত কারণ এটি তাদের ত্বকের জন্য অতিরিক্ত জ্বলন ও চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।
- নিম পাতা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নিম পাতা সেবন বিপদজনক হতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
- দীর্ঘমেয়াদে নিম পাতা বা নিম তেল সেবনে যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। যকৃতের সমস্যা থাকা রোগীদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
নিম পাতার পেস্ট:
- কিছু তাজা নিম পাতা সংগ্রহ করুন এবং সেগুলি ভালো করে ধুয়ে নিন।
- পাতা গুলো মিহি করে পেস্ট তৈরি করুন। আপনি চাইলে একটু পানি যোগ করতে পারেন যাতে পেস্টটি ভালোমতো তৈরি হয়।
- এই পেস্টটি ব্রণের উপরে সরাসরি লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট রাখুন যাতে পেস্টটি ভালোভাবে শুকিয়ে যায়।
- এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- ভালো ফলাফলের জন্য এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
নিম পাতা চা:
- এক মুঠো তাজা বা শুকনা নিম পাতা নিন।
- এক কাপ পানিতে এই পাতাগুলি দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
- চা ঠান্ডা হয়ে গেলে এটি ছেঁকে নিন।
- একটি তুলো বা কটন প্যাড চায়ে ভিজিয়ে নিন।
- তুলোটি ব্রণের উপরে আলতো করে প্রয়োগ করুন।
- ১০-১৫ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
নিম পাতা ও মুলতানি মাটির প্যাক:
- কিছু নিম পাতা পেস্ট এবং মুলতানি মাটি (ফুলার্স আর্থ) নিন।
- একটি পাত্রে দুইটি উপাদান মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এই পেস্টটি মুখে বা ব্রণের উপরে প্রয়োগ করুন।
- ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
- এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- এটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
নিম তেল:
- বাজার থেকে ভালো মানের নিম তেল কিনুন।
- রাতে ঘুমানোর আগে নিম তেল ব্রণের উপর আলতো করে লাগিয়ে নিন।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
নিম পাতা ও দইয়ের প্যাক:
- কিছু তাজা নিম পাতা পেস্ট তৈরি করুন।
- এর সাথে ২ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
- প্যাকটি মুখে বা ব্রণের উপর প্রয়োগ করুন।
- ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করতে পারেন।
- নিম পাতা ব্যবহারে ত্বকের জ্বালা বা অ্যালার্জি হতে পারে। তাই প্রথমবার ব্যবহারের আগে একটি ছোট স্থানে পরীক্ষা করে নিন।
- যাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল, তাদের নিম পাতার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।
- দীর্ঘমেয়াদে নিম পাতা ব্যবহার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- নিম পাতার পেস্ট খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। এক মুঠো তাজা নিম পাতা নিয়ে জল দিয়ে বেটে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এটি চুলের স্ক্যাল্পে ভালো করে লাগান এবং ৩০ মিনিট রেখে দিন। পরে সাধারণ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে খুশকি কমে যাবে এবং স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকবে।
- নিম পাতার রস চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। নিম পাতার রস স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন এবং ১ ঘণ্টা রেখে দিন। পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিম পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ চুলের গোড়াকে মজবুত করে এবং চুল পড়া কমায়।
- নিম পাতার তেল চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। নিম পাতা ও নারকেল তেল একসাথে ফুটিয়ে নিন। এই তেল ঠান্ডা হলে স্ক্যাল্পে এবং চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। রাতে রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের বৃদ্ধির জন্য কার্যকর।
- নিম পাতার চা চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক কাপ জলে কিছু নিম পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করুন। চুল ধোয়ার পর এই চা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
- নিম পাতার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাগুণ চুলের সংক্রমণ রোধ করে। নিম পাতার পেস্ট স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি স্ক্যাল্পের সংক্রমণ এবং চুলকানি দূর করবে।
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো দেখুন
নিম পাতা ও মুলতানি মাটির ফেস প্যাক
- ১০-১২টি তাজা নিম পাতা
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি (ফুলার্স আর্থ)
- পানি বা গোলাপ জল
- নিম পাতাগুলি ধুয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- মুলতানি মাটির সাথে নিম পাতা পেস্ট মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- প্রয়োজন হলে কিছু পানি বা গোলাপ জল যোগ করুন।
- পেস্টটি মুখে ও গলায় সমানভাবে লাগান।
- ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন বা পুরোপুরি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
নিম পাতা ও দইয়ের ফেস প্যাক
- ১০-১৫টি নিম পাতা
- ২ টেবিল চামচ দই
- নিম পাতা দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- দইয়ের সাথে নিম পাতা পেস্ট মিশিয়ে নিন।
- এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করবে, সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করলে ফলাফল পাবেন।
নিম পাতা ও মধুর ফেস প্যাক
- ১০-১২টি নিম পাতা
- ১ টেবিল চামচ মধু
- নিম পাতা পেস্ট তৈরি করুন।
- মধুর সাথে নিম পাতা পেস্ট মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- মধুর ময়েশ্চারাইজিং গুণাবলী ত্বককে নরম এবং উজ্জ্বল করবে।
নিম পাতা ও হলুদের ফেস প্যাক
- ১০-১২টি নিম পাতা
- ১ চিমটি হলুদ
- পানি
- নিম পাতা পেস্ট তৈরি করুন।
- হলুদ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগান।
- ২০ মিনিট রেখে দিন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- হলুদের অ্যান্টিসেপটিক গুণাবলী ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
- প্যাচ টেস্ট: নিম পাতা ব্যবহার করার আগে একটি প্যাচ টেস্ট করুন, বিশেষত যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল হয়।
- সাপ্তাহিক রুটিন: নিয়মিত ব্যবহারের জন্য সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার উপযুক্ত, তবে প্রতিদিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
- ময়েশ্চারাইজার: নিম পাতা ত্বককে শুকিয়ে দিতে পারে, তাই ব্যবহারের পর একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- সানস্ক্রিন: দিনের বেলা নিম পাতা ব্যবহারের পর ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, কারণ এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করবে।
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- কারি পাতার রস চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলে চুল পড়া কমে। এক মুঠো তাজা কারি পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করুন। এই রস স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন এবং ৩০ মিনিট রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে চুল পড়া কমে যাবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হবে।
- কারি পাতা এবং নারকেল তেল মিশিয়ে তেল তৈরি করুন। কিছু কারি পাতা নিয়ে নারকেল তেলে ফুটিয়ে নিন যতক্ষণ না পাতাগুলি কালো হয়ে যায়। ঠান্ডা হলে এই তেল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। রাতে রেখে সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
- খুশকি দূর করতে কারি পাতার পেস্ট খুবই কার্যকর। কিছু কারি পাতা নিয়ে জল দিয়ে বেটে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি স্ক্যাল্প পরিষ্কার করে এবং খুশকি কমায়।
- কারি পাতা প্রাকৃতিকভাবে চুলের রং বজায় রাখতে সাহায্য করে। কারি পাতা এবং আমলকী মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলকে কালো ও উজ্জ্বল রাখে।
- কারি পাতার জুস চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিছু কারি পাতা ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করুন। এই জুস চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন এবং তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলকে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
- কারি পাতা চুলের পুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে। কারি পাতা এবং মেথি দানা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এটি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে এবং চুলকে শক্তিশালী করে।
মুখে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- ব্রণ কমাতে নিম পাতার পেস্ট খুবই কার্যকর। এক মুঠো তাজা নিম পাতা নিয়ে পানি দিয়ে বেটে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি মুখের ব্রণের উপরে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিমের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ ব্রণ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পরিষ্কার রাখে।
- একটি ফেসপ্যাক তৈরি করতে নিম পাতা ও মুলতানি মাটি মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
- নিম পাতার টোনার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এই নিম পানি ঠান্ডা হলে একটি বোতলে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন মুখ ধোয়ার পর এই টোনারটি ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের পিএইচ মাত্রা বজায় রাখে এবং ত্বককে সতেজ ও মসৃণ করে।
- নিম পাতার স্ক্রাব ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। কিছু নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন এবং এতে চিনি ও মধু মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি দিয়ে ত্বক আলতোভাবে স্ক্রাব করুন। এটি ত্বকের ময়লা ও মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও পরিষ্কার রাখে।
- তাজা নিম পাতা ব্লেন্ড করে এর সাথে অল্প পরিমাণ বেসন মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি প্রতিদিন মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ রাখে।
- নিম পাতার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাগুণ ত্বকের সংক্রমণ রোধে কার্যকর। কিছু নিম পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করুন এবং এটি সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন। এটি ত্বকের সংক্রমণ কমায় এবং প্রদাহ দূর করে।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার গুলো দেখুন
- তাজা নিম পাতা নিয়ে পানি দিয়ে বেটে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি চুলকানির স্থানে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলকানি কমে যাবে এবং ত্বক শীতল ও স্বস্তি পাবে।
- নিম পাতার রস চুলকানি নিরাময়ে কার্যকর। তাজা নিম পাতা ব্লেন্ড করে রস বের করুন এবং এই রসটি সরাসরি চুলকানির স্থানে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিমের রস ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
- নিম পাতার তেল তৈরি করতে কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে নারকেল তেলে ফুটিয়ে নিন যতক্ষণ না পাতাগুলি কালো হয়ে যায়। এই তেল ঠান্ডা হলে চুলকানির স্থানে ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের চুলকানি কমায় এবং ত্বককে শীতলতা প্রদান করে।
- নিম পাতার বাথ চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। কিছু তাজা নিম পাতা পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন এবং সেই পানি ঠান্ডা করে বাথটাবে মিশিয়ে নিন। এই পানিতে ১৫-২০ মিনিট স্নান করুন। এটি ত্বককে শীতল করে এবং চুলকানি কমায়।
- নিম পাতা এবং মুলতানি মাটি মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাকটি চুলকানির স্থানে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন এবং শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং চুলকানি কমায়।
- নিম পাতার টোনার তৈরি করতে কিছু তাজা নিম পাতা ফুটিয়ে নিন। এই পানি ঠান্ডা করে একটি বোতলে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন মুখ ও শরীরের চুলকানির স্থানে এই টোনারটি ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের পিএইচ মাত্রা বজায় রাখে এবং চুলকানি কমায়।
নিউয়েস্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url